কীভাবে গান বাজনার আবিষ্কার হলো



সময়টা ছিল নবী শীথ (আঃ) এর যুগের কথা। আদম (আঃ) এর ইন্তেকালের পর সমাজের নেতৃত্বের দায়ভার পড়ল তার পুত্র শীথ (আঃ) এর কাছে। তখন শীথ (আঃ) এর সমাজের লোকেরা পাহাড়ী অঞ্চলে বসবাস করত। অন্যদিকে তার ভাই কাবিল ও কাবিলের সমাজের লোকেরা পাহাড়ের নিচে সমতল অঞ্চলে বসবাস করত। কাবিল ও তার সমাজের লোকেরা বিভিন্ন পাপাচারে লিপ্ত ছিল। অন্যদিকে শীথ (আঃ) ও তার সমাজের লোকেরা আল্লাহকে ভয় করে সুন্দরভাবে জীবন-যাপন করতে লাগল।

🍁শীথ (আঃ) এর গোত্রকে পথভ্রষ্ট করার জন্য ইবলিস বিভিন্ন পরিকল্পনা করতে থাকে। সে সময় শীথ (আঃ) এর সমাজের মধ্যে পুরুষদের সৌন্দর্য ছিল বেশি কিন্তু নারীদের সৌন্দর্য এত বেশি ছিল না। অন্যদিকে কাবিলের সমাজের মধ্যে ব্যাপারটি ছিল এর বিপরীত। সেখানকার নারীদের সৌন্দর্য ছিল পুরুষদের থেকে বেশি।

🍁এমন অবস্থায় ইবলিস একটি তরুণের বেশ ধরে কাবিলের সমাজে বসবাস করতে লাগল। সে একজন ধাতু কর্মীর সাথে কাজ করতে লাগল এবং সেখানে কাজ করতে করতে ইবলিস এমন একটি যন্ত্র তৈরি করল যা মানবসমাজ তখনো পর্যন্ত দেখে নি। তা ছিল একটি বাঁশি। শেষে সে বাঁশি বাজাতে শুরু করল এবং তা থেকে এমন এক ধ্বনি বের হতে লাগল যা মানুষ আগে কখনো শুনে নি। সেই ধ্বনি আশেপাশের মানুষকে বিমোহিত করল এবং তারা সপ্তাহের একদিন নির্ধারণ করল ইবলিসের সেই বিস্ময়কর শব্দ একত্রিত হয়ে উপভোগ করার জন্য।
🍁কাবিলের সমাজের এই সাপ্তাহিক আয়োজনের শব্দ শীথ (আঃ) এর কিছু মানুষের কাছে পৌঁছায় এবং তারা একে অপরকে প্রশ্ন করে, তারা কী করছে? এসব কেমন শব্দ?

🍁শীথ (আঃ) তাদেরকে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেন আল্লাহ আমাদেরকে তাদের সাথে মেলামেশা করতে নিষেধ করেছেন অতএব আমাদের তাদের থেকে দূরে থাকতে হবে এবং তারা এসে তওবা করার আগ পর্যন্ত তাদের সাথে কোনো মেলামেশা করা যাবে না। কিন্তু শীথ (আঃ) তাদেরকে বারণ করার সত্বেও কিছু মানুষ পাহাড় থেকে নেমে গিয়ে কাবিলের সমাজের সেই গান-বাজনার আয়োজন দেখতে থাকল। সেই গান-বাজনা তাদেরকে আকৃষ্ট করল এবং কাবিলের সমাজের নারীরাও তাদেরকে আকৃষ্ট করতে লাগল। শীথ (আঃ) এর গোত্রের লোকেরা আগে কখনো এমন রুপবতী নারী দেখে নি। অন্যদিকে কাবিলের গোত্রের লোকেরা এত সুদর্শন পুরুষ আগে কখনো দেখে নি। তারা একে অপরকে আকৃষ্ট করতে লাগল। নারীরা বেপর্দা হয়ে তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন করতে লাগল এবং সবাই সেই গান-বাজনা উপভোগ করতে লাগল।

🍁তারপর যেটি হওয়ার কথা সেটিই হল। মানব ইতিহাসে তখন প্রথমবারের মত যিনা আরম্ভ হল এবং পরকিয়া হারাম সম্পর্ক সৃষ্টি হল। তারপর দুই সমাজেই পাপ ও ব্যভিচার বাড়তে লাগল।

🍁আর এভাবেই ইবলিস শুধুমাত্র তার বাজনা দিয়ে উভয় গোত্রকে জাহান্নামের দিকে ঠেলে দিল।

🍁আর বর্তমানেও ইবলিসের সেই প্রথম হাতিয়ার মিউজিক দ্বারা হাজার হাজার মানুষ পথভ্রষ্ট হচ্ছে। আজকে আমাদের সমাজের সবার ঘরে ঘরে এই মিউজিক।

🍁ইবলিস/শয়তানের এই হাতিয়ার মানুষের ব্রেইনকে নিয়ন্ত্রণ করে মানুষকে বিভিন্ন পাপ, ব্যভিচার, পরকিয়া,যিনা ও অশ্লীলতার দিকে ধাবিত করছে।
ইসলামে যেসব করতে নিষেধ করা হয়েছে তার অবশ্যই কোনো না কোনো শারীরিক ও মানসিক প্রভাব রয়েছে।
আমাদের রাসূল (সঃ) গান-বাজনাকে হারাম বলে ঘোষণা করে গিয়েছেন। কারণ তিনি জানতেন ইহা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর এবং ইহা মানবসমাজকে অশ্লীলতার দিকে ঠেলে দেই।

🍁মিউজিক হল শয়তানের কন্ঠ ও অন্তরের মদ। মিউজিক মানব ব্রেইনকে নিয়ন্ত্রণ করে বিভিন্ন পাপাচার ও অবৈধ যৌনাচারে লিপ্ত করে। মিউজিক মানুষের ব্রেইনের বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান ও সেক্স হরমোনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। যার ফলে শয়তান খুব সহজেই মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করে পাপাচারে লিপ্ত করাতে পারে।

🍁সবচেয়ে বড় উদাহরণ হচ্ছে কাবিলের গোত্রের সেই ঘটনাটি। ইবলিস যখন বাঁশি বাজাতে লাগল তখন সেই ধ্বনি তাদের ব্রেইনকে আয়ত্তে নিয়ে নিল এবং তারা অশ্লীলতার দিকে ঝুঁকে পড়ল।

🍁মিউজিক আমাদের দেহ ও মন মানসিকতাকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করে, কীভাবে পাপাচারে লিপ্ত করতে পারে তার সায়েন্টিফিক বায়োলজিক্যাল ব্যাখ্যা পরবর্তী পর্বে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে ইনশাআল্লাহ।
অনুসন্ধানঃ #Shovon_The_Truth_Hunter

এ সম্পর্কে বাসিরার ভিডিওঃ


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

খলিফাদের তালিকা

আল্লাহ আমাদের কতই নিয়ামত দিয়েছেন - শায়েখ আহমদ্দুল্লাহ

এস্তেঞ্জা লজ্জাস্থানের রোগব্যাধির কারণ (সুন্নাহ বনাম আধুনিকতা)